আপনি কী কোন কাজ শিখতে চান, কিন্তু টাকার অভাবে শিখতে পারতেছেন না। কোন চিন্তা করবেন না, আপনার কথা মাথায় রেখেই আমার আজকের এই পোস্ট। বিশেষ করে যারা প্রত্যন্ত অঞ্চল অর্থাৎ গ্রামে রয়েছেন তাদের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি পোস্ট। আমরা সকলেই জানি যেকোন ধরনের কাজের কোর্স করতে হলে একটা কোচিং সেন্টারে ভর্তি হতে হয়। আর এই কোচিং সেন্টারগুলোর অবস্থান হয়ে থাকে শহর কেন্দ্রিক। তো আমরা যারা গ্রামে থাকি তাদের উক্ত কোচিং সেন্টারে ভর্তি হতে হলে ফি বাবদ টাকা লাগার পাশাপাশি থাকা এবং খাওয়ার জন্যও বেশ টাকার প্রয়োজন হয়। আর আমাদের অনেকেরই আর্থিক সংকটের কারণে এতো টাকা বহন করে কোচিং করা সম্ভব হয়ে উঠে না। আর যার জন্য আমরা অনেক পিছিয়ে থাকি। কিন্তু আপনি যদি উল্লেখিত এইসব সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন। তাহলে আপনার উপকারে আসবে এই পোস্টটি।
নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষে পল্লী উন্নয়ন একাডেমি মূলত এই কোর্সের আয়োজন বা পরিকল্পনা করেছে। যার অবস্থান বগুড়ায়। অতএব আপনি যদি কোর্স করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে বগুড়াতে গিয়ে কোর্স সম্পন্ন করতে হবে।
আপনার যদি আশা এবং ইচ্ছা দুটোই থাকে তাহলে আপনি একদম ফ্রিতে এই কোর্স করার সুযোগটি পাবেন। তো আপনি এখানে কী কী কোর্স করতে পারবেন তা নিয়ে এইবার আলোচনা করা যাক। বিশেষ করে আপনাদের মাঝে যাদের খুব ফ্রিল্যান্সিং শেখার এবং করার ইচ্ছে বা আগ্রহ আছে তাদের জন্য এটি একটি বিশাল সুযোগ। অর্থাৎ আপনি এখানে ফ্রিল্যান্সিং কোর্স করতে পারবেন। যারা বাহিরে যাওয়ার জন্য অথবা দেশে কাজ করার জন্য ইলেক্ট্রিকাল কাজ শিখতে চান তারা এখানে ইলেক্ট্রিকাল কোর্স করতে পারবেন। ফ্রিজ ও এসির সার্ভিসিং এর কাজ শেখার কোর্সও এখানে আছে যার বর্তমান বাজারে অনেক চাহিদা। অনেকেরই ড্রাইভিং শেখার স্বপ্ন থাকে আপনার এই স্বপ্ন পূরণের জন্য ড্রাইভিং কোর্স রয়েছে। সেলাইয়ের কাজের কোর্স রয়েছে এবং মোবাইল সার্ভিসিং এর কোর্সও রয়েছে। তো এখানে উল্লেখিত সবকটি কোর্স থেকে আপনার যেটি পছন্দ আপনি সেটি করতে পারেন।
বিশেষ করে একদম ফ্রিতে থাকা খাওয়া সহ আপনি এই কোর্সগুলো থেকে আপনার পছন্দমত যেকোন একটি কোর্স করতে পারবেন। যা আমি উপরেও বলেছি। তবে আবার একটু মনে করিয়ে দিলাম আরকি।
যোগ্যতা: আপনি এই কোর্সগুলো থেকে আপনার পছন্দের যেকোন একটি কোর্স করতে আপনার কী কী যোগ্যতার প্রয়োজন তা এইবার দেখে নেই। সর্বপ্রথম আপনাকে একজন বাংলাদেশী নাগরিক হতে হবে। আপনি পুরুষ কিংবা মহিলা যেটাই হোন না কেন আপনি এই কোর্সটি করতে পারবেন। বয়সের কথা বলতে গেলে আপনার বয়স ১৮-৩৫ এর মধ্যে হতে হবে। তবে নির্বাচকরা যদি আপনার শারীরিক এবং মানসিক উপযুক্ততা আছে বলে লক্ষ করে তাহলে সেক্ষেত্রে আপনার বয়স শিথিল যোগ্য হতে পারে। শিক্ষাগত যোগ্যতা তেমন কিছু লাগবে না যদি আপনার ৮ম শ্রেণি পাশ, জেএসসি অথবা জেডিসি পাশ সার্টিফিকেট থাকে তাহলেই আপনি আবেদন করতে পারবেন। তবে যারা সেলাইয়ের কোর্স করতে চান তাদের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা হয়তো আরো শিথিল হতে পারে। সেটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে নির্বাচকদের উপর।
যদি আপনি উপরোল্লিখিত সবকটি যোগ্যতায় পাশ করে থাকেন। তাহলে আপনি আর দেরী না করে আগামী ১৭ই মে - ২০২২ইং এর বিকেল ০৪.৩০ মিনিটের মধ্যে আপনার পছন্দের কোর্সটির জন্য আবেদন করে ফেলুন। এখন আসুন কিভাবে আবেদন করবেন তা জেনে নেই।
প্রথমে আপনাকে এখান থেকে একটি পিডিএফ ফরমেটের আবেদন কপি ডাউনলোড করতে হবে। যা দেখতে ঠিক উপরের স্ক্রিনশটের মত। অথবা আপনি চাইলে এখান থেকে ওয়ার্ড ফরমেটের ফাইল ডাউনলোড করে নিতে পারেন। এখন আপনি যদি চান উপরোল্লিখিত আবেদন কপিটির খালি স্থান বা শূণ্যস্থান হাতে লিখতে তাহলে আপনি আপনার নিকটস্থ কোন কম্পিউটারের দোকান থেকে এটি প্রিন্ট দিয়ে এটিতে প্রথমে তারিখের জায়গায় আপনি যে তারিখে আবেদনটি করবেন সে তারিখ লিখে নিন। তারপর বিষয়ের জায়গায় যে বিষয়ে কোর্স করতে আপনি আগ্রহী সেটির নাম লিখুন। তারপর নাম এর জায়গায় আপনার নাম। এর পরবর্তী খালি ঘরে যে কোর্স করবেন সেটির নাম লিখবেন। তারপর নিবেদকের এখানে আপনার নাম লিখবেন এবং এর নিচে স্বাক্ষরের জায়গা আপনার একটি স্বাক্ষর দিবেন। তারপর সংশ্লিষ্ট তথ্যাদি এর জায়গায় আপনার নাম, পিতার নাম, মাতার নাম, স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা, জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার ও আপনার মোবাইল নাম্বার লিখবেন। তারপর নিচে সংযুক্তি এর জায়গায় আপনি সাথে সাথে কী কী কাগজ দিচ্ছেন তা তার পাশে থাকা বক্সের মধ্যে টিকচিহ্ন দিন। তারপর আবারো নিচে নাম, স্বাক্ষর ও তারিখ দিন এবং এটি স্ক্যান করে নিন। এইভাবে আপনি চাইলে ওয়ার্ড ফাইলটিও কম্পিউটার বা মোবাইলের মাধ্যমে টাইপ করে পূরণ করে নিতে পারেন। আপনার যেভাবে সুবিধা হয়।
আবেদন ফরম পূরণ তো করলেন এইবার তা কিভাবে জমা দিবেন তা দেখে নেই। আপনি আপনার আবেদনটি দুটি পদ্ধতিতে জমা দিতে পারেন। দুটি পদ্ধতির একটি হলো ডাক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রেরণ করে। আর আরেকটি হলো ইমেইল এর মাধ্যমে মেইল করে জমা দিতে পারবেন। তো এখন যেহেতু ডিজিটাল যুগ এবং সবার হাতেই মোটামুটি স্মার্টফোন রয়েছে। আর স্মার্টফোনে অবশ্যই জিমেইল বা যেকোন ইমেইল ব্যবহার করে থাকেন। তাহলে আপনার উচিৎ হবে মেইলের মাধ্যমে আপনার আবেদন কপিটি পাঠাতে বা জমা দিতে।
আপনি যদি তাই করতে চান তাহলে এই makhanporag@gmail.com ইমেইল অ্যাড্রেস অথবা এই msrashidrda@gmail.com ইমেইল অ্যাড্রেসে আপনার আবেদন কপিটি পাঠিয়ে দিন। তবে মনে রাখবেন আপনাকে ইমেইল করতে অবশ্যই আপনার আবেদন কপির স্ক্যান কপি, জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি, সার্টিফিকেটের স্ক্যান কপি ও আপনার রঙ্গিন ছবির স্ক্যান কপি একসাথে পাঠাতে হবে।
আর আপনি যদি সরাসরি ডাকযোগে পাঠাতে চান তাহলে আপনাকে পরিচালক প্রশিক্ষক, পল্লী উন্নয়ন একাডেমি, শেরপুর, বগুড়া - ৫৮৪২ বরাবর আপনার আবেদন কপির হার্ড কপি, জাতীয় পরিচয়পত্র কপি, সার্টিফিকেটের কপি ও আপনার দুই কপি রঙ্গিন ছবি একটি ইনবিলাব বা খামে করে পাঠিয়ে দিন।
আবেদন করার পর আবেদনের শেষ তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। আবেদনের শেষ তারিখ যেহেতু আগামী ১৭ই তারিখ। এর পরের দিন অর্থাৎ ১৮ তারিখে আপনি স্ব-শরীরে উপস্থিত হয়ে মৌখিক পরীক্ষা দিতে হবে। আর এখান থেকেই মূলত প্রশিক্ষণার্থী বাচাই করে নেওয়া হবে।
যদি আপনি বাছাইতে টিকে যান তাহলে আপনি ১৯ তারিখ আপনার কাঙ্ক্ষিত কোর্সটি শুরুর জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করুন। যা ১৯শে মে ২০২২ইং তারিখে শুরু হয়ে ১৮জুন ২০২২ইং তারিখ পর্যন্ত মোট ৩০ দিন যাবত প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। বলে রাখা ভালো আপনি যদি প্রত্যন্ত অঞ্চল অর্থাৎ পল্লী বা গ্রামের বাসিন্দা হয়ে থাকেন তাহলে আপনার জন্য এই কোর্সে নির্বাচিত হওয়াটা সহজ হবে। কেননা মূলত এই কোর্সের আয়োজনই করা হয়েছে গ্রামের হত দরিদ্র বেকার যুবক ও যুবতীর কথা মাথায় রেখেই।
আর হ্যাঁ, ১৮ তারিখে বাছাই পর্বে যদি আপনি টিকে যান তাহলে মনে রাখবেন ঐদিন রাত ০৮.০০ ঘটিকার মধ্যে একাডেমিক হোস্টেল অফিস থেকে আপনার জন্য বরাদ্দকৃত হোস্টেল কক্ষটি বুঝে নিন। আশা করি পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগেছে এবং উপকারে এসেছে।
আপনাদের সুবিধার্থে আমি আমার টিপস এন্ড ট্রিকসগুলি ভিডিও আকারে শেয়ার করার জন্য একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করেছি। আশা করি চ্যানেলটি Subscribe করবেন।
(p)
উত্তরমুছুন