বাংলাদেশের মূল অর্থনীতির চাবিকাঠি হলো প্রবাসী ভাইরা যা আমাদের সকলেরই জানা। আমাদের দেশের প্রবাসী ভাইরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মের উদ্দেশ্যে নিজের দেশ, পরিবার, আত্মীয়স্বজন রেখে পাড়ি জমান। যার মাধ্যমে নিজেও আর্থিকভাবে সাবলম্বী হন এবং দেশকেও অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করে তোলেন। আর তাই আমার আজকের টপিক হচ্ছে আমাদের দেশ থেকে যারা প্রবাসে যেতে ইচ্ছুক তাদের জন্য৷ বিশেষ করে যারা দক্ষিণ কোরিয়ায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন তাদের জন্য আজকের এই টপিক। কেননা আমাদের দেশ থেকে বিদেশে কর্মের উদ্দেশ্যে যত দেশে যাওয়া হয় তার মধ্যে বেতনের দিক থেকে অন্যতম অবস্থানে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। কারণ সেখানে কমপক্ষে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা মাসিক বেতন হয়ে থাকে।
আশা করি আমাদের মোটামুটি সকলেরই ধারনা আছে যে দক্ষিণ কোরিয়ায় যেতে হলে অবশ্যই আবেদন করতে হয় এবং তারপর লটারির মাধ্যমে একজন কোরিয়াগামী প্রার্থীকে নির্বাচন করা হয়। মনে রাখবেন এইবার আবেদন প্রক্রিয়াকে দুইভাগে ভাগ করা হয়েছে। একটি হচ্ছে যারা কোরিয়ান ভাষায় পারদর্শী না বা অপারদর্শী অর্থাৎ কোরিয়ান ভাষা জানেন না তাদের জন্য আলাদা আবেদনের পদ্ধতি। আর যারা জানেন তাদের জন্য আলাদা আবেদনের পদ্ধতি। তাই আমি উক্ত টপিককে দুইভাগে ভাগ করেছি। এই টপিকটিতে মূলত যারা কোরিয়ান ভাষায় পারদর্শী না বা কোরিয়ান ভাষা জানেন না তাদের জন্য বিস্তারিত আলোচনা করেছি বা করব। আর যারা কোরিয়ান ভাষায় পারদর্শী তাদের জন্য আলাদা একটি টপিক তৈরি করেছি। সেটি দেখতে নিচের শিরোনাম সম্বলিত লিংকে ক্লিক করে দেখে নিন।
কোরিয়ান ভাষা পারদর্শীরা দক্ষিণ কোরিয়ায় যেতে চাইলে তাড়াতাড়ি আবেদন করুন।
কোরিয়ান ভাষা অপারদর্শীদের আবেদনের যোগ্যতাঃ
- আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা নূন্যতম এসএসসি/সমমান থাকতে হবে,
- আপনার বয়স ২৯/০৯/১৯৮২ থেকে ২৮/০৮/২০০৪ এর মধ্যে হতে হবে,
- আপনার পাসপোর্টের মেয়াদ কমপক্ষে ৬ মাস থাকতে হবে ১ বছর থাকলে সবচেয়ে ভালো হবে,
- আপনার কালার ব্লাইন্ডনেস ও রং বোঝার ক্ষমতা থাকতে হবে,
- আপনি কোনোরকম মাদকসেবি হতে পারবেন না,
- আপনার বিরূদ্ধে কোনো ধরনের ফৌজদারি মামলা থাকতে পারবে না এবং এই রকম কোনো শাস্তির ভোগের আওতায় থাকা যাবে না,
- আপনি এর আগে দক্ষিণ কোরিয়াতে অবৈধভাবে অবস্থান করেননি,
- আপনার উপর কোনো দেশে অর্থাৎ বিদেশ যেতে কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা নেই,
- আপনি এর আগে কোরিয়াতে ই৯ বা ই১০ ভিসায় ৫ বছরের অধিক থাকেননি,
- প্রাথমিক এই আবেদনে আপনার কোনো কোরিয়ান ভাষা জানা লাগবে না। (তবে হ্যাঁ নির্বাচিত হওয়ার পর অবশ্যই কোরিয়ান ভাষা পড়তে, লিখতে ও বুঝতে জানতে হবে।)
তো এই উপরোল্লিখিত শর্তগুলি যদি আপনি সঠিকভাবে পূরণ করতে পারেন তাহলেই কেবল আপনি দক্ষিণ কোরিয়ায় যেতে পারবেন বা আবেদনের যোগ্য হবেন। আর যদি উপরোল্লিখিত শর্তগুলি পূরণ করতে না পারেন তাহলে কিন্তু আবেদন করে লাভ নেই। তাই অযথা আবেদন করে টাকা নষ্ট করার দরকার নেই।
“আবেদন করার বিস্তারিত তথ্য বা গাইডলাইন পেতে মূল পিডিএফ ফাইলটি এখানে ক্লিক করে গুগল ড্রাইভ লিংক থেকে ডাউনলোড করে নিন।”
কোরিয় ভাষা অপারদর্শীদের কোরিয়ায় যাওয়ার জন্য আবেদন করার পদ্ধতিঃ
আপনি যদি কোরিয়ায় যেতে চান এবং নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে চান তাহলে এই http://eps.boesl.gov.bd লিংকে প্রবেশ করে আবেদন করা শুরু করে দিন। উল্লেখ্য কোরিয়ান ভাষা জানা না থাকা ব্যাক্তিদের এখানে আবেদন করতে হলে ২৯/০৮/২০২২ইং তারিখ সকাল ১১.০০ ঘটিকা থেকে ৩১/০৮/২০২২ বিকেল ৫.০০ ঘটিকা পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন। যে যত আগে আবেদন করবেন সে সেই সিরিয়াল অনুযায়ী আগে থাকবেন। মনে রাখবেন এটি কিন্তু প্রাথমিক নিবন্ধন। আর হ্যাঁ ২৯ থেকে ৩১ তারিখের মধ্যে আবেদনের সময় রাত ১২.০০ ঘটিকা থেকে রাত ২.০০ ঘটিকা পর্যন্ত সাইটের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আবেদন করতে পারিবেন না। তাই এই সময় বাদ দিয়ে বাকী সময়ের মধ্যে আবেদন করার চেষ্টা করবেন। উপরোল্লিখিত সাইটে আবেদন করার পদ্ধতি নিচে স্ক্রিনশট আকারে দেওয়া হলো।
কোরিয় ভাষা অপারদর্শীদের কোরিয়ায় যাওয়ার জন্য আবেদনের ফিঃ
২৯ তারিখ থেকে ৩১ তারিখের মধ্যে আবেদন করার সময় আবেদন সম্পন্ন করতে এই সময়ের মধ্যে আপনাকে আবেদনের ফি পরিশোধ করতে হবে। অন্যথায় আবেদন সম্পন্ন হবে না।
আবেদনের ফি হচ্ছে মোট ৫০০ (পাঁচশত টাকা মাত্র) এর সাথে বিকাশ চাঁর্জ বাবদ ৫.৭৫ পয়সা কাটবে। তাই আপনার বিকাশ একাউন্টে সেই পরিমাণ টাকা রাখতে হবে। আর এই টাকা পরিশোধ করার জন্য অবশ্যই বিকাশ অ্যাপের ব্যবহার করতে হবে বা বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে পরিশোধ করতে হবে। বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে কিভাবে আবেদনের ফি পরিশোধ করবেন তার একটি নমুনা বা কপি বা স্ক্রিনশট উপরে দেওয়া হলো। অর্থাৎ উপরের স্ক্রিনশটটি লক্ষ্য করুন।
কোরিয় ভাষা অপারদর্শীদের কোরিয়ায় যাওয়ার জন্য আবেদনেরে সময় নির্ধারিত সাইজের ছবি ও পাসপোর্ট কপির নমুনাঃ
কোরিয় ভাষায় অপারদর্শীদের কোরিয়ায় যাওয়ার জন্য আবেদনেরে সময় নির্ধারিত সাইজে ছবি ও পাসপোর্ট কপি দিতে হবে এবং যে ধরনের ছবি এবং পাসপোর্ট কপি আবেদনের সময় গ্রহণযোগ্য হবে বা আপনাকে যে ধরনের ছবি ও পাসপোর্ট কপি দিতে হবে তা দেখতে বা বুঝতে উপরের স্ক্রিনশটগুলি ভালো করে লক্ষ্য করুন।
উল্লেখ্য উপারোল্লিখিত স্ক্রিনশটগুলি বোয়েলসের গাইডলাইন থেকে নেওয়া। কারণ সময়স্বল্পতার কারণে আমি নিজে আবেদন করে আপনাদের দেখাতে পারিনি। যেহেতু আমি আজ রাত ১২ টা থেকে এই টপিকটি লিখতে বসেছি। আমি যদি আপনাদের আবেদন করে দেখাতে যেতাম তাহলে আমাকে ২৯ তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। আর আমি যদি ততক্ষণ অপেক্ষা করি তাহলে আপনাদের এই জরুরি ব্যাপারটি জানাতে বিলম্ব হয়ে যাবে। এতে করে আপনারা প্রস্তুতি নিতে পারবেন না। আর হ্যাঁ অনেক তাড়াহুড়ো করে লিখেছি তাই যদি কোনো ভুলভ্রান্তি হয়ে থাকে তাহলে আশা করি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
আপনাদের সুবিধার্থে আমি আমার টিপস এন্ড ট্রিকসগুলি ভিডিও আকারে শেয়ার করার জন্য একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করেছি। আশা করি চ্যানেলটি Subscribe করবেন।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Thanks for your comment.