আমাদের আজকের টিউটোরিয়ালটি হলো পাসপোর্টের জন্য অনলাইনে কিভাবে আবেদন করা যায় সে প্রক্রিয়া নিয়ে। আগে পাসপোর্ট করার জন্য লম্বা লাইনে দাঁড়াতে হতো এবং অনেকে দালালের খপ্পরেও পড়তেন। তো সেইসব যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতেই এই অনলাইন সিস্টেম করা হয়েছে। যার মাধ্যমে সহজে নিজেনিজে নিজের পাসপোর্টের জন্য অনলাইনে আবেদন করে পরবর্তীতে পাসপোর্ট নেওয়া যায়। তো তা কিভাবে অনলাইনে করবেন সে বিষয় নিয়ে আমরা আজকে বিস্তারিত জানবো।
পাসপোর্টের জন্য অনলাইনে আবেদন করার পূর্বে আপনাকে পাসপোর্টের আবেদনের ফি বাবদ ব্যাংকে ফি পেমেন্ট বা প্রদান করতে হবে। এর জন্য দুইরকম ফি রয়েছে। একটি হচ্ছে ৩০ দিনের মধ্যে যে পাসপোর্ট তার জন্য ৩০০০/- টাকা আর ভ্যাটসহ ৩৪৫০/- টাকা। আরেকটি হচ্ছে ইমারজেন্সি ১৫ দিনের মধ্যে যে পাসপোর্ট তার জন্য ফি হচ্ছে ৬০০০/- টাকা আর ভ্যাটসহ ৬৯০০/- টাকা। তো আপনি যেটা করতে চান, সেটার জন্য ব্যাংকে টাকা জমা দিন। যে ব্যাংকগুলোতে টাকা জমা দিতে পারবেন সেগুলো হলো - সোনালী ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, প্রিমিয়াম ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক ও ঢাকা ব্যাংক। টাকা জমা দেওয়ার পর যে রিসিট দিবে ঐ রিসিটের নম্বর এবং জমা দেওয়ার তারিখ সংরক্ষণ করুন।
টাকা জমা দেওয়ার পর আবেদন করার পূর্বে আপনার জন্মনিবন্ধন ও আইডি কার্ড সামনে নিয়ে বসুন। কারণ এখানের তথ্য ও বানান দেখে দেখেই আপনাকে আবেদন করতে হবে। তো অনলাইনে আবেদন করতে প্রথমে এই http://www.passport.gov.bd ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। তাই লিংকটিতে ক্লিক করুন। লিংকটিতে ক্লিক করার পর নিচের লেখাসহ স্ক্রিনশটগুলো ভালো করে ফলো করুন।
সাইটটিতে প্রবেশ করার পর ঠিক উপরের স্ক্রিনশটের মত আসবে। এখানে দেখুন কিছু নির্দেশনা দেওয়া আছে এগুলো ভালো করে পড়ে নিচে গিয়ে আপনি উপরোল্লিখিত বিষয়গুলো পড়েছেন এই মর্মে টিকচিহ্ন দিয়ে Continue to Online Enrolement বাটনে ক্লিক করুন।
তারপর উপরের বামপাশের স্ক্রিনশটের মত পাসপোর্টের ইনফরমেশন পূরণের একটি ফরম আসবে। এখানে আপনাকে ফরমের ঘর অনুযায়ী ফরম পূরণ করতে হবে। Passport Type এর জায়গায় Ordinary সিলেক্ট করতে হবে। Delivery Type এর জায়গায় আপনি পাসপোর্টটি কয়দিনের মধ্যে পেতে চান তা আরকি। এইক্ষেত্রে স্বাভাবিক বা ৩০ দিনের মধ্যে পেতে Regular সিলেক্ট করুন। আর ইমারেজেন্সি বা ১৫ দিনের মধ্যে পেতে Express সিলেক্ট করুন। আপনার আইডি কার্ড বা জন্মনিবন্ধনে যেভাবে ইংরেজিতে আপনার পুরো নাম দেওয়া আছে সেইভাবে Name of applicant এর ঘরে টাইপ করুন। আপনার পুরো নামকে দুইভাগ করলে যেইরকম হবে তার প্রথমভাগ First Part এর ঘরে টাইপ করুন আর দ্বিতীয়ভাগ Second Part এর ঘরে টাইপ করুন। Guardian এর এখানে টিকচিহ্ন দেওয়ার দরকার নাই। আপনার আইডি কার্ড বা জন্মনিবন্ধনে যেভাবে আপনার বাবা-মায়ের নাম দেওয়া আছে ঠিক সেইভাবে Fathers Name ও Mothers Name এর ঘরে টাইপ করুন এবং তাদের জাতীয়তা ও পেশা সিলেক্ট করে দিন। আপনি যদি বিবাহিত হোন তাহলে স্বামী/স্ত্রীর নাম, জাতীয়তা ও পেশা সিলেক্ট করে দিন। আপনার বৈবাহিক অবস্থা, পেশা, যে দেশে জন্ম তার নাম, যে জেলায় জন্ম তার নাম, জন্মতারিখ, লিঙ্গ, জন্ম সনদ নম্বর, আইডি কার্ড নম্বর, উচ্চতা ও ধর্ম সিলেক্ট করে দিন। তারপর ডানপাশের স্ক্রিনশটের মত আপনার ইমেইল অ্যাড্রেস, জাতীয়তা, নাগরিকত্ব সিলেক্ট করে দিন। Dual Citizenship এর জায়গায় অন্যকোনো দেশের নাগরিকত্ব থাকলে Yes দিন আর না থাকলে No দিন। তারপর আপনার বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানা টাইপ করে Save & Next বাটনে ক্লিক করুন।
তারপর উপরের স্ক্রিনশটের মত আপনার সাথে যোগাযোগ করার ইনফরমেশন পূরণ করতে হবে। এখানে স্ক্রিনশটে সিলেক্টকৃত Mobile No. এর ঘরে আপনার মোবাইল নম্বরটি দিন। এর উপরের ঘরগুলোতে কিছু দেওয়া লাগবে না। তারপর Emergency Contact Persons Details এর ঘরগুলোতে আপনার কোনো সমস্যা বা অন্যকোনো কারণে আপনার পরিচিত বা গার্ডিয়ান হিসেবে যার সাথে যোগাযোগ করবে তার সকল ইনফরমেশন এখানে দিতে হবে। তারপর আপনি যদি এর আগে পাসপোর্ট করে থাকেন তার ইনফরমেশন Old Passport Information এর ঘরগুলোতে দিতে হবে। আর যদি এর আগে পাসপোর্ট না করে থাকেন তাহলে এটি খালি রেখে Save & Next বাটনে ক্লিক করুন।
তারপর উপরের স্ক্রিনশটের মত আপনি আবেদনের ফি বাবদ ব্যাংকে যে পেমেন্ট করেছেন তার এখানে পূরণ করতে হবে। এখানে আপনাকে Non-Online সিলেক্ট করে কত টাকা পেমেন্ট করেছেন তা উল্লেখ করে যে তারিখে টাকা পেমেন্ট করেছেন সেই তারিখ, পেমেন্ট করার পর যে রিসিট দিয়েছে তার নম্বর, যে ব্যাংকে পেমেন্ট করেছেন তার নাম এবং ঐ ব্যাংকের শাখার নাম সিলেক্ট করে Save & Next বাটনে ক্লিক করুন।
তারপর উপরের স্ক্রিনশটের মত আসবে। এখানে নিচে গিয়ে Save বাটনে ক্লিক করুন।
তারপর উপরের স্ক্রিনশটের মত একটি ম্যাসেজ আসবে। যেখানে উল্লেখ থাকবে ১৫ দিনের মধ্যে জমা দেওয়ার কথা। তো এখানে Ok বাটনে ক্লিক করুন।
তারপর উপরের স্ক্রিনশটের মত দেখবেন আপনার আবেদনকৃত ফরমটি এসে গেছে এটি রঙ্গিন প্রিন্ট দিয়ে কিছু স্থানে আপনার সই দিন। তারপর আপনার চার কপি রঙ্গিন ছবি, আইডি কার্ডের ফটোকপি এবং ঐ অনলাইন আবেদনকৃত ফরমটি নিয়ে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তার কাছে গিয়ে সত্যায়িত করে নিন।
তারপর অনলাইনে আবেদন করার ১৫ দিনের মধ্যে সত্যায়িত করার পর আপনার জেলার পাসপোর্ট অফিসে জমা দিয়ে ছবি এবং ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিন। তারপর আপনাকে একটি রিসিট দিবে। যার মাধ্যমে পরবর্তীতে আপনার পাসপোর্টটি নিতে হবে।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Thanks for your comment.